ছোট্টো মেয়ে ও গরীব কৃষক (শিশুতোষ গল্প)
এক ছিলো গরীব কৃষক। কৃষক সারাদিন মাঠে চাষ করতো আর সন্ধ্যা হলে বাড়ি ফিরতো। একদিন সন্ধ্যায় কৃষক মাঠ থেকে বাড়ি ফেরার পথে দেখলো পথের ধারে একটা ছোটো মেয়ে কাঁদছে।
মেয়েটা কেনো কাঁদছে জিজ্ঞেস করতে সে বললো শহর থেকে বাবা-মায়ের সাথে বেড়াতে এসেছে। কিন্তু দুপুরে বাবা-মা ঘুমিয়ে গেলে সে চুপিসারে গ্রাম ঘুরতে বেরিয়ে পথ হারিয়ে ফেলে। সারাদিন সে কিছু খায় নি। এ কথা শুনে গরীব কৃষকের খুব মায়া হল। কৃষক মেয়েটাকে তার বাড়ি নিয়ে পান্তা ভাত খেতে দিলো। গাভী থেকে দুধ দুইয়ে গরম করে দিলো। মেয়েটা ভরপেট খেয়ে ঘুমিয়ে গেল। পরদিন মাইকিং শুনে কৃষক মেয়েটাকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফেরত দিলো। সব কথা জানতে পেরে তারা কৃষককে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে শহরে ফিরে গেল।
তারপর অনেকদিন গড়িয়ে গেল। ততদিনে গরীব কৃষক বুড়ো হয়ে যায়। বুড়ো কৃষক অনেক অসুস্থ হয়ে শহরে হাসপাতালে যায়। হাসপাতালে অনেকদিন তার চিকিৎসা চলে। বুড়ো কৃষক আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠতে থাকে। কিন্তু যতত সুস্থ হতে থাকে কৃষকের দুশ্চিন্তা ততই বাড়তে থাকে। কারণ বাড়ি ঘর সব বিক্রি করে বুড়ো কৃষকের হাতে খুব অল্পই টাকা থাকে। যেদিন হাসপাতাল থেকে বুড়ো কৃষককে রিলিজ দিয়ে দিলো, সেদিন বিল হাতে নিতে নিতে কৃষকের আতঙ্ক তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে। কৃষক বিল হাতে নিয়ে দেখে তাতে লেখা, "একদিন ভরপেট খাওয়া, গরম দুধ ও আশ্রয় দেয়ার সমতুল্য বিল পরোশোধিত হল!"
ছোট্ট মেয়েটা ততদিনে অনেক বড় হয়ে সে হাসপাতালের একজন নামকরা ডাক্তার হয়। সেই ডাক্তার মেয়েটি বুড়ো কৃষকের চিকিৎসা করে তাকে সারিয়ে তোলে।
উপকার অনেক গুণ হয়ে ফেরত আসে।
মন্তব্যসমূহ